নারী উদ্যোক্তারা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কারণে তাদের উদ্যোগে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আসুন এই সীমাবদ্ধতাগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করি:
ক. সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতা
-
পারিবারিক দায়িত্ব: নারীদের উপর সাধারণত পরিবারের যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব বেশি থাকে। ফলে ব্যবসায়ের দিকে পুরো মনোযোগ দেওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
-
সামাজিক চাপ: সমাজে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় ইতিবাচক হয় না। অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে ঘরের কাজে সীমাবদ্ধ রাখার চাপ দেওয়া হয়।
-
লিঙ্গ বৈষম্য: কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে নারীরা প্রায়ই পুরুষদের তুলনায় কম বেতন পান এবং কম গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকেন।
-
সম্পদের অভাব: অনেক নারীর ব্যবসা শুরু করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বা সম্পদ থাকে না। কারণ, সমাজে নারীদের নামে সম্পত্তি থাকার প্রচলন কম।
খ. অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা
-
বিনিয়োগের অভাব: নারীদের উদ্যোগে বিনিয়োগকারী খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে। অনেক বিনিয়োগকারী নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক দক্ষতার উপর সন্দেহ করেন।
-
নেটওয়ার্কের অভাব: নারী উদ্যোক্তাদের পুরুষ উদ্যোক্তাদের মতো একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা কঠিন হয়।
-
বাজারজাতকরণ ও বিক্রয়ের সমস্যা: নারী উদ্যোক্তাদের তাদের পণ্য বা সেবা বাজারজাত করতে এবং বিক্রয় করতে সমস্যা হয়।
-
আইনী জটিলতা: অনেক দেশে নারীদের সম্পত্তি অধিকার এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সীমিত।
গ. নারী উদ্যোক্তাদের সীমাবদ্ধত দূর করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে
-
সচেতনতা সৃষ্টি: সমাজে নারী উদ্যোক্তাদের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
-
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ: নারীদের ব্যবসায়িক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
-
আর্থিক সহায়তা: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা ও ঋণ সুবিধা সৃষ্টি করা।
-
নেটওয়ার্ক গঠন: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নেটওয়ার্ক গঠন করে তাদেরকে সহযোগিতা করার সুযোগ দেওয়া।
-
আইনগত সহায়তা: নারীদের সম্পত্তি অধিকার এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।